সুনানে ইবনে-মাজাহ
অনুচ্ছেদ: ১৫
بَابُ رَفْعِ اليَدَيْنِ إِذا رَكَعَ وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ
রুকুতে যেতে ও রুকূ থেকে মাথা তুলতে রাফউল ইয়াদাইন করা। ২
٨٥٨ - حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ وَهِشَامُ ابْنُ عَمَّارٍ وَأَبُو عَمْرِو الصِّرِيرُ قَالُوا ثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم إذا افْتَتَحَ الصَّلاةَ رَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى يُحَاذِيَ بِهِمَا مَنْكِبَيْهِ وَإِذَا رَكَعَ وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ وَلَا يَرْفَعُ بَيْنَ السَّجِدَتَيْنِ
৮৫৮। ইবনে উমার (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছি যে, তিনি নামায শুরু করতে তাঁর দুই হাত তাঁর দুই কাঁধ পর্যন্ত উত্তোলন করতেন, তিনি রুকূতে যেতে এবং রুকূ থেকে মাথা তুলতেও তাই করতেন কিন্তু দুই সিজদার মাঝখানে হাত উত্তোলন করতেন না ।
২. রুকুর সময় রফউল ইয়াদাইন বা হাত উত্তোলন সম্পর্কে পরস্পর বিরোধী হাদীস রয়েছে। ইমাম শাফিঈ ও আহমাদ ইবনে হাম্বল (রা)-এর মাযহাব মতে রফউল ইয়াদাইন করতে হবে। ইমাম আবু হানীফার মতে এ সম্পর্কিত হাদীস মানসূখ (রহিত) হয়ে গেছে। তাই হানাফী মাযহাবের অনুসারীগণ রফউল ইয়াদাইন করেন না।
শাহ ওয়ালিউল্লাহ দিহলাবী (রা) বলেন, “মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনও রফউল ইয়াদাইন করতেন, কখনও করতেন না। সুতরাং উভয়টাই সুন্নাত । এর প্রত্যেকটিই সাহাবা, তাবিঈন ও তাদের পরবর্তী লোকদের এক এক দল গ্রহণ করেছেন এবং প্রত্যেকের পক্ষেই দলীল-প্রমাণ রয়েছে। সুতরাং কোন সুন্নাত নিয়ে বাড়াবাড়ি করে পরস্পর ঝগড়ায় লিপ্ত হওয়া শরীআতের বিধান নয় (অনুবাদক)।
রুকূতে যাওয়ার সময় রফউল ইয়াদাইন করা : ইমাম মালেক (রা) নামাযে সব সময় হাত ছেড়ে রাখেন। তিনি শুধুমাত্র নামায শুরু করার সময় হাত তোলেন, ইমাম মালেকের অপর একটি মত ইমাম শাফিঈর মতের অনুরূপ। ইমাম শাফিঈর মতে রুকূ করার সময় এবং রুকূ থেকে উঠার
সুনান ইবনে মান্না সময় রফউল ইয়াদাইন (দুই হাত কাঁধ অথবা কান পর্যন্ত উত্তোলন) করতে হবে। তিনি ইবনে উমার (রা)-র হাদীস দলীল হিসাবে গ্রহণ করেন। ইমাম আবু হানীফার মতে নামায শুরু করার সময় ব্যতীত আর কোন সময় রফউল ইয়াদাইন করবে না। কেননা রফউল ইয়াদাইন ইসলামের শুরুতে ছিল।
অতঃপর নামাযের শুরু ছাড়া অন্য সময়ে রফউল ইয়াদাইন করার হুকুম ক্রমান্বয়ে মানসুখ হয়ে যায়, শুধু নামায শুরু করার সময় রফউল ইয়াদাইন করার হুকুম বহাল থাকে। হানাফী আলেমরা ইমাম শাফিঈর জবাবে বলেন, ইমাম শাফিঈ শুধুমাত্র রুকু করা এবং রুকূ থেকে উঠার সময় রফউল ইয়াদাইনের হুকুম গ্রহণ করেছেন।
অথচ হাদীসে আর যে সকল সময়ে রফউল ইয়াদাইন করার কথা উল্লেখ আছে তিনি তাতে তা করেন না। তাহলে প্রশ্ন উঠে, ইমাম শাফঈ নামাযের দুইটি অবস্থা ছাড়া অন্যান্য অবস্থায় কেন রফউল ইয়াদাইন করেন না? অথচ ইমাম শাফিঈ বলেন যে, তিনি আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রা)-র হাদীসের উপর আমল করেন। কারণ ইবনে উমার (রা)-র হাদীস সনদের দিক থেকে অধিক শক্তিশালী।
ইবনে উমারের হাদীস বুখারী শরীফে আনা হয়েছে। তার সনদও সহীহ এবং নির্ভুল। কিন্তু এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয়, প্রথম বৈঠক থেকে উঠার সময়ও রফউল ইয়াদাইন করতে হবে। তাছাড়া অপর একটি হাদীসে বর্ণিত আছে : “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক উঠা, বসা এবং নামাযের এক রুকন থেকে অন্য রুকনে যাওয়ার সময় রফউল ইয়াদাইন করতেন”।
কিন্তু ইমাম শাফিঈ এসব হাদীস পরিত্যাগ করেছেন। তার এই বর্জনের কারণই বা কি এবং এর জবাব বা কি? তিনি এ হাদীসমূহের যে জবাব দিবেন, আমরাও রুকু এবং রুকু থেকে উঠার সময় রফউল ইয়াদাইন না করার জবাব তাই দিবো। তাছাড়া মুজাহিদ (র) সাহাবী ইবনে উমার (রা)-র নিজস্ব আমলের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ইবনে উমার (রা) তাকবীরে তাহরীমা ছাড়া অন্য কোন অবস্থায় রফউল ইয়াদাইন করতেন না।
ইমাম আবু জাফর তাহাবী (র) এ প্রসংগে বলেন, যে সকল রাবী থেকে রফউল ইয়াদাইন করার হাদীস বর্ণিত আছে, তাদের থেকে রফউল ইয়াদাইন না করার হাদীসও বর্ণিত আছে।
ইমাম আবু হানীফার দলীল আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা)-র হাদীস। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) মৃত্যু পর্যন্ত নামাযে তাকবীরে তাহরীমা ছাড়া আর কোন সময়ে রফউল ইয়াদাইন করেননি। যদি রফউল ইয়াদাইন করা জরুরী হতো, তবে ইবনে মাসউদ (রা) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর পর অন্তত এক বা দু'বার অবশ্যই রফউল ইয়াদাইন করতেন।
অথচ ইবনে মাসউদ (রা) হাদীসের একজন হাফেয এবং মুজতাহিদ হওয়া সত্ত্বেও রফউল ইয়াদাইনের হাদীস ত্যাগ করেছেন। আর হাদীসবিদগণ ইবনে মাসউদ (রা)-কে জ্ঞান ও ইজতিহাদের ক্ষেত্রে আবু বাক্ব (রা) ও উমার ফারুক (রা)-র উপর ফ্যীলাত দিয়েছেন। ইমাম আবু হানীফা (রা)-র মাযহাবের আর একটি দলীল এই যে, ইবনে মাসউদ (রা)-র প্রশংসায় বর্ণনা করা হয়েছে যে, তিনি একজন সাবধানী ও সতর্ক ব্যক্তি ছিলেন।
তিনি কোন হাদীসের উপর আমল করা ত্যাগ করতেন না যতক্ষণ দিবালোকের ন্যায় তা মানসূখ হওয়ার ব্যাপারটি তার নিকট সাব্যস্ত না হতো। এ কারণেই তিনি রুকূতে তাজবীক করা ত্যাগ করেননি (তাতবীক অর্থ : দুই হাতের আংগুলগুলো একত্র করে রুকু এবং তাশাহ্হুদের সময় দুই হাঁটুর মাঝখানে রাখা)
।সুতরাং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পর ইবনে মাসউদ (রা)-র রফউল ইয়াদাইনের আমল ছেড়ে দেয়া এবং ইবনে উমার (রা)-র রফউল ইয়াদাইন করার পর পুনরায় ছেড়ে দেয়া প্রমাণ করে যে, রফউল ইয়াদাইনের হুকুম মানসুখ হয়ে গেছে। ইবনে উমার (রা) এ সম্পর্কে আরও বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রফউল ইয়াদাইন করেছেন এবং আমরাও তা করেছি। এরপর তিনি তা ছেড়ে দিয়েছেন এবং আমরাও ছেড়ে দিয়েছি।
ইমাম আওযাঈ (র) একদা ইমাম আবু হানীফার সাথে রফউল ইয়াদাইন নিয়ে বিতর্কে লিপ্ত হন। ইমাম 'আওযাঈ ইমাম আবু হানীফাকে জিজ্ঞাসা করেন, আপনি কেন রফউল ইয়াদাইন করেন না? তিনি উত্তরে বলেন, এটা আমার নিকট প্রমাণিত হয়নি বলে আমি তা করি না।
ইমাম আওযাঈ বলেন, কি করে এটা আপনার নিকট প্রমাণিত হয়নি? অথচ ইবনে শিহাব যুহরী (র) আমাকে সালেম (র) থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন, তিনি ইবনে উমার (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন এবং তিনি নবী সাল্লাল্লাহু
مَسْعَدَةَ ثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ تَنَا هِشَامٌ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ نَصْرُ بن حمید بْنِ عَاصِمٍ عَنْ مَالِكِ بْنِ الْحُوَيْرِثِ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا كَبَّرَ رَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى يَجْعَلَهُمَا قَرِيبًا مِنْ أَذنَيْهِ وَإِذَا رَكَعَ صَنَعَ مِثْلَ ذَلِكَ وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ صنَعَ مِثْلَ ذلكَ
৮৫৯। মালেক ইবনুল হুয়াইরিস (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাকবীরে তাহ্রীমা বলতেন তখন তাঁর দুই হাত তাঁর উভয় কানের কাছাকাছি পর্যন্ত উঠাতেন। তিনি রুকুতে যেতেও তাই করতেন এবং রুকূ থেকে মাথা তুলতেও অনুরূপ করতেন ।
٨٦٠- حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ وَهِشَامُ ابْنُ عَمَّارٍ قَالَا ثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَيَّاشٍ عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ الله له بَرفَعُ يَدَيْه في الصلاة حذو منكبيه حينَ يَفْتَتِحُ الصَّلاةَ وَحَيْنَ يركع وحين يسجد .
আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন: “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রফউল ইয়াদাইন করতেন”। এর উত্তরে ইমাম আবু হানীফা (র) বললেন, আমাকে হাম্মাদ বর্ণনা করেছেন, তিনি ইবরাহীম আন্-নাখঈ থেকে, তিনি আলকামা থেকে, তিনি ইবনে মাসউদ (রা) থেকে এবং তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রফউল ইয়াদাইন করেননি”। ইমাম আওযাঈ বলেন, আপনার ও ইবনে মাসউদের মাঝে রাবীদের তিনটি স্তর রয়েছে। আর আমার ও ইবনে উমার (রা)-র মাঝে মাত্র দুইটি স্তর আছে। ইমাম আবু হানীফা (র) ইমাম আওযাঈকে বলেন, হাঁ।
কিন্তু আমার সনদের রাবীগণ আপনার সনদের রাবীদের তুলনায় অধিক শক্তিশালী। কেননা হাম্মাদ যুহরীর তুলনায় অধিক ফযীলাতের অধিকারী। ইবরাহীম নাখঈ সালেম অপেক্ষা অধিক মর্যাদা সম্পন্ন। আর আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রা) সম্পর্কে আমি বলবো, যদি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহচর্যের কারণে সাহাবীদের অধিক ফযীলাত না হতো তাহলে ইবনে উমার (রা)-র তুলনায় আলকামা (র) অধিক মর্যাদার অধিকারী হতেন।
আর আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) তো সকলেরই জানা ব্যক্তি। এমনকি লোকেরা তাকে আবু বাক্র (রা) ও উমার (রা)-র তুলনায় অধিক ফযীলাত দান করেছেন। উমার (রা) ইবনে মাসউদ (রা) সম্পর্কে বলেন, “তিনি হচ্ছেন জ্ঞানের ঘর" । উবাই (রা) তার সম্পর্কে বলেন, “অভিজ্ঞ ব্যক্তি যতদিন তোমাদের মাঝে উপস্থিত থাকবেন ততোদিন আমাকে কোন বিষয়ে জিজ্ঞাসা করো না”।
তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবস্থা সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত ছিলেন। ইমাম আবু হানীফার উত্তর শুনে ইমাম আওযাঈ নীরব হয়ে যান। ইমাম আবু হানীফার এই যুক্তিসংগত বক্তব্য আর ইবনে মাসউদ (রা)-র বৈশিষ্ট্য প্রমাণ করে যে, ইবনে মাসউদ (রা) বর্ণিত হাদীস অধিক শক্তিশালী (শায়খুল হিন্দ মাহমূদুল হাসান)।
৮৬০। আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছি যে, তিনি নামায শুরু করতে, রুকুতে যেতে এবং সিজদায় যেতে তাঁর দুই হাত তাঁর দুই কাঁধ বরাবর উত্তোলন করতেন ।
٨٦١ - حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ ثَنَا رِفْدَةُ بْنُ قُضَاعَةَ الْغَسَانِيُّ ثَنَا الْأَرْزَاعِيُّ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُبَيْدِ بْنِ عُمَيْرٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِهِ عُمَيْرِ بْنِ حَبِيْبٍ قَالَ كَانَ رَسُولُ الله له يَريعُ يَدَيْهِ مَعَ كُل تكبيرة في الصلاة المكتوبة
৮৬১ । আবদুল্লাহ ইবনে উবাইদ ইবনে উমাইর (রা) থেকে তার পিতা ও তার দাদার সূত্রে 'বর্ণিত। তিনি (দাদা) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরয নামাযের প্রতিটি তাকবীরের সাথে তাঁর দুই হাত উপরে উঠাতেন ৷
٨٦٢ - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ثَنَا يَحْيَ بْنُ سَعِيدٍ ثَنَا عَبْدُ الْحَمِيدِ بْنُ جَعْفَرٍ تَنَا وَهُوَ فِي عَشَرَةٍ مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ عَطَاءٍ عَنْ أَبِي حُمَيْدٍ السَّاعِدِي قَالَ سَمِعْتُهُ. مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَحَدُهُمْ أَبُوْ قَتَادَةَ بَنَ رَبْعِي قَالَ أَنَا أَعْلَمُكُمْ بِصَلَاةِ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا قَامَ فِي الصَّلاةِ اعْتَدَلَ قَائِمًا وَرَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى يُحَاذِيَ بهِمَا مَنْكِبَيْهِ ثُمَّ قَالَ اللهُ اكْبَرُ وَإِذا أَرَادَ أَنْ يُركَعَ رَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى يُحَاذِيَ بِهِمَا مَنْكِبَيْهِ فَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَفَعَ يَدَيْهِ فَاعْتَدَلَ فَإِذَا قَامَ مِنَ المُنْتَيْنِ00كَبُرَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى يُحَاذِيَ بِهِمَا مَنْكَبَيْه كَمَا صَنَعَ حِيْنَ افْتَتَحَ الصَّلاةَ .
৮৬২। আবুু হুুমাইদ আদ-সাইদি (রা) হতে বর্ণিত, তিনি আবুু কতদা (রা)-সহ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দশজন সাহাবীর উপস্থিতিতে বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামায সম্পর্কে তোমাদের চেয়ে অধিক অবগত। তিনি যখন নামাযে দাঁড়াতেন সোজা হয়ে দাঁড়াতেন এবং তাঁর দুই হাত তাঁর কাঁধ বরাবর উঠাতেন, অতঃপর আল্লাহু আকবার বলতেন।
তিনি যখন রুকূতে যাওয়ার ইচ্ছা করতেন তখনও তাঁর দুই হাত তাঁর দুই কাঁধ বরাবর উঠাতেন। অতঃপর তিনি যখন 'সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ' বলতেন, তাঁর দুই হাত উত্তোলন করতেন এবং সোজা হয়ে দাড়াতেন। তিনি দ্বিতীয় রাআতে দুই সিজাদা থেকে যখন দাঁড়াতেন তখন তাকবীর বলতেন এবং তাঁর দুই হাত তার কাঁধ বরাবর উঠাতেন, যেমনটি তিনি নামায শুরু করার সময় করতেন ।
٨٦٣ - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ثَنَا أَبُو عَامِرٍ ثَنَا فَلَيْحُ بْنُ سُلَيْمَانَ ثَنَا عَبَّاسُ بْنُ سَهْلِ السَّاعِدِي قَالَ اجْتَمَعَ أَبُو حَمِيْدٍ وَ أَبُو أُسَيْد السَّاعِدِيُّ وَسَهْلُ بْنُ سَعْدٍ وَمُحَمَّدُ بْنُ مَسْلَمَةَ فَذَكَرُوا صَلاةَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَبُو حُمَيْدٍ أَنَا أَعْلَمُكُمْ بصَلَاة رَسُول الله صلى الله عليه وسلم أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَامَ فَكَبُرَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ ثُمَّ رَفَعَ حِيْنَ كَبُرَثُمَّ قَامَ فَرَفَعَ يَدَيْهِ وَاسْتَوَى حَتَّى رَجَعَ كُلُّ عَظم إِلَى مَوْضِعه.
৮৬৩। আল-আব্বাস ইবনে, সাহুল আল-সাইদী(রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবু হুমাইদ, আৰু উসাইদ আস-সাইদী, সাহল ইবনে সাদ ও মুহাম্মাদ ইবনে মাসলামা (রা) একত্র হয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামায সম্পর্কে আলোচনা করেন। আবু হুমাইদ (রা) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামায সম্পর্কে তোমাদের চেয়ে অধিক অবগত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযে দাঁড়িয়ে তাকবীর বলতেন এবং তাঁর উভয় হাত উপরে উঠাতেন। তিনি তাকবীর বলে রুকুতে যাওয়ার সময়ও হাত উপরে উঠাতেন, অতঃপর দাঁড়াতেন এবং তাঁর দুই হাত উপরে উঠাতেন ও সোজা হয়ে দাঁড়াতেন, যাতে সকল প্রত্যঙ্গ যথাস্থানে এসে স্থির হয়।
٨٦٤ - حَدَّثَنَا الْعَبَّاسُ بْنُ عَبْدِ العَظِيمِ العَنبَرِيُّ ثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ أَبُو أَيُّوبَ الهَاشِمِيُّ ثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الزَّنَادِ عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْفَضْلِ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْأَعْرَجِ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي رَافِعٍ عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طالب قال كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذا قَامَ إِلَى الصَّلاةِ المَكْتُوبَةِ كَبُرَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى يَكُونَا حَذْوَ مَنْكِبَيْهِ وَإِذَا أَرَادَ أَنْ يُرْكَعَ فَعَلَ مِثْلَ ذَلِكَ وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ فَعَلَ مِثْلَ ذَلِكَ وَإِذَا قَامَ مِنَ السَّجْدَتَيْنِ فَعَلَ مِثْلَ ذَلِكَ
৮৬৪ । আলী ইবনে আবু তালিব (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ফরয নামায পড়তে দাঁড়াতেন তখন তাকবীর বলতেন এবং তাঁর দুই হাত তাঁর দুই কাঁধ বরাবর উঠাতেন। যখন তিনি রুকূতে যাওয়ার ইচ্ছা করতেন, তখনও অনুরূপ করতেন, যখন রুকূ থেকে মাথা উঠাতেন, তখনও অনুরূপ করতেন । যখন তিনি দুই রাকআত শেষ করে দাঁড়াতেন তখনও অনুরূপ করতেন ৷
٨٦٥ - حَدَّثَنَا أَيُّوبُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْهَاشِمِيُّ ثَنَا عُمَرُ بْنُ رَبَاحٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاؤُس عَنْ أَبِيهِ عَن ابْن عَبَّاس أَنْ رَسُولَ الله صلى الله عليه وسلم كَانَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ عِنْدَ كُلِّ تَكْبيرة
৮৬৫। ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি তাকবীরের সময় তাঁর দুই হাত উপরে উঠাতেন ।
٨٦٦ - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ تَنَا حُمَيْدٌ عَنْ أَنَسٍ أَنْ رَسُولِ الله صلى الله عليه وسلم كَانَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ إِذَا دَخَلَ فِي الصَّلاةِ وَإِذَا رَكَعَ
৮৬৬। আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায শুরু করার সময় এবং রুকূতে যাওয়ার সময় তাঁর দুই হাত (উপরে) উঠাতেন।
٨٦٧- حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ مُعَادَ الضَّرِيرُ ثَنَا بِشَرُ بْنُ الْمُفَضلِ ثَنَا عَاصِمُ بْنُ كُليب عَنْ أَبِيهِ عَنْ وائل بن حُجْرٍ قَالَ قُلتُ لأَنْظُرَن إِلى رَسُول الله صلى الله عليه وسلم كَيْفَ يُصَلَّى فَقَامَ فَاسْتَقبل القبلة فَرَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى حَاذَنَا بأذنيه فَلَمَّا رَكَعَ رَفَعَهُمَا مِثْلَ ذلكَ فَلَمَّا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ رَفَعَهُمَا مِثْلَ ذَلِكَ.
৮৬৭। ওয়াইল ইবনে হুজর (রা) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি মনে মনে ভাবছিলাম যে, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিভাবে নামায পড়েন তা অবশ্যই দেখবো। তিনি দাঁড়িয়ে কিবলামুখী হলেন এবং তাঁর দুই হাত তাঁর দুই কান বরাবর উঠালেন। তিনি রুকূতে যাওয়ার সময়ও তাঁর দুই হাত অনুরূপভাবে উঠালেন। তিনি যখন রুকূ থেকে তাঁর মাথা উঠালেন তখনও তাঁর উভয় হাত অনুরূপভাবে উঠালেন ।
-٨٦٨ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْى ثَنَا أَبُو حُذَيْفَةَ لَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ طَهْمَانَ عَنْ أَبِي الزبير أن جَابِرَ بْنَ عَبْد الله كَانَ إِذا افْتَتَحَ الصَّلاةَ رَفَعَ يَدَيْهِ وَإِذا رَكَعَ وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ فَعَلَ مِثْلَ ذَلِكَ وَيَقُولُ رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَعَلَ مِثْلَ ذَلِكَ وَرَفَعَ إِبْرَاهِيمُ بْنُ طَهْمَانَ يَدَيْهِ إلى أُذُنَيْه .
৮৬৮। আবু যুবাইর (র) থেকে বর্ণিত। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা) যখন নামায শুরু করতেন, তখন তার উভয় হাত উপরে উঠাতেন। তিনি যখন রুকূ করতেন এবং রুক্ থেকে তার মাথা উঠাতেন, তখনও অনুরূপ করতেন। তিনি বলতেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এরূপ করতে দেখেছি। অধস্তন রাবী ইবরাহীম ইবনে তামান (র) তার দুই হাত তার দুই কান পর্যন্ত উঠালেন।
🙇🙇নামাযে রুকু।👰👰
আমাদের এই ইউটুব চ্যেনেলে কুরআন সুন্নাত হাদীস,দৌনন্দিন জিকিরের ফজিলত বিষয়ে